
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ কর্মসূচির আওতায় দ্বিতীয় কিস্তির অর্থছাড়ের আগে সংস্থাটির একটি রিভিউ মিশন বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। আজ থেকে তারা সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসছে। এসব বৈঠকে ঋণ কর্মসূচির আওতায় যেসব শর্ত রয়েছে সেগুলোর বাস্তবায়ন ও অগ্রগতির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। এর মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, রাজস্ব আহরণ পরিস্থিতি ও জ্বালানি পণ্যের দাম নির্ধারণের মতো বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এসব মানদণ্ডে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। তবে এর মধ্যে রিজার্ভের দিক দিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ সবচেয়ে নাজুক অবস্থানে রয়েছে। ফলে এটিই শেষ পর্যন্ত আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থছাড়ের ক্ষেত্রে মূল নিয়ামক হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আইএমএফের এশিয়া-প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে সংস্থাটির একটি রিভিউ মিশন চলতি মাসের ৪ থেকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবে। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় আইএমএফের কর্মকর্তারা অর্থ বিভাগের সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সঙ্গে বৈঠক করবেন। একই দিন প্রতিনিধি দলটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে। মিশন চলাকালীন আইএমএফের কর্মকর্তারা বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থার সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। রিভিউ মিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইএমএফের পর্ষদ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ আগামী নভেম্বরে ছাড় করা হতে পারে।
চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডের সভায় বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। সাত কিস্তিতে ৪২ মাসে এ ঋণ পাবে বাংলাদেশ। ঋণের গড় সুদের হার ২ দশমিক ২ শতাংশ। ৪৭০ কোটি ডলারের মধ্যে দুই ধরনের ঋণ রয়েছে। বর্ধিত ঋণ সহায়তা বা বর্ধিত তহবিল (ইসিএফ অ্যান্ড ইএফএফ) থেকে পাওয়া যাবে ৩৩০ কোটি ডলার। রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় পাওয়া যাবে ১৪০ কোটি ডলার। গত ফেব্রুয়ারিতে সংস্থাটির কাছ থেকে ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার বুঝে পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৬ সাল পর্যন্ত এ ঋণ কর্মসূচি চলাকালীন বাংলাদেশ সরকারকে বিভিন্ন ধরনের শর্ত পরিপালন ও সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের পর এক বিবৃতিতে আইএমএফ জানিয়েছিল, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষা, সামাজিক ও উন্নয়নমূলক ব্যয়ে সক্ষমতা তৈরিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা, আর্থিক খাত শক্তিশালী করা, নীতি কাঠামো আধুনিক করে তোলা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার কাজে এ ঋণ সাহায্য করবে।