
টানা পাঁচদিন শনাক্তের সংখ্যা দুই হাজারের বেশি থাকার পর গতকাল তা এ সীমার নিচে নেমে এসেছে। তবে নমুনা পরীক্ষাও এ সময়ে কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৮৪৭ জন কভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হওয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ২৮১। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে ২৮ জন রোগীর, যা আগের দিন ছিল ১৭ জন। দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ১১৭টি পরীক্ষাগারে ১২ হাজার ৪৫৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আগের কিছু নমুনাসহ এ সময় ১২ হাজার ৬৪৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ পর্যন্ত মোট ২৬ লাখ ৩৫ হাজার ২০২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ পর্যন্ত ৬ হাজার ৩৫০ জন করোনা রোগী মারা গেছেন। নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বিবেচনায় গতকাল শনাক্তের হার ছিল ১৪ দশমিক ৬১ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বাসা ও হাসপাতালে মোট ১ হাজার ৯২১ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছে। এতে সুস্থের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৩৫২। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ১৮ জন পুরুষ ও ১০ জন নারী। মৃতদের মধ্যে ১৯ জনই ষাটোর্ধ্ব, ছয়জনের বয়স ৫১-৬০ বছরের মধ্যে, একজন করে তিনজনের বয়স ৪১-৫০, ৩১-৪০ ও ১১-২০ বছর বয়সসীমার মধ্যে। তারা সবাই হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে ১৬ জন ঢাকা, তিনজন করে ছয়জন চট্টগ্রাম ও রাজশাহী, দুজন করে চারজন খুলনা ও বরিশাল, একজন করে দুজন সিলেট ও রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৬ হাজার ৩৫০ জনের মধ্যে ৪ হাজার ৮৮১ জন পুরুষ ও ১ হাজার ৪৬৯ জন নারী। তাদের মধ্যে ৩ হাজার ৩৫৩ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ১ হাজার ৬৬৩ জনের বয়স ৫১-৬০ বছরের মধ্যে, ৭৭৩ জনের বয়স ৪১-৫০, ৩৩৫ জনের বয়স ৩১-৪০, ১৪৫ জনের বয়স ২১-৩০, ৫১ জনের বয়স ১১-২০ এবং ৩০ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
মৃতদের মধ্যে ৩ হাজার ৩৪৯ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ২৩১ জন চট্টগ্রাম, ৩৮৮ জন রাজশাহী, ৪৮৬ জন খুলনা, ২১৪ জন বরিশাল, ২৬২ জন সিলেট, ২৯০ জন রংপুর ও ১৩০ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম শনাক্ত হয়। গত ১১ মার্চ নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সৃষ্ট রোগ কভিড-১৯-কে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বিশ্বের ২১৫টি দেশ ও অঞ্চলে এরই মধ্যে ভাইরাসটির সংক্রমণ ছড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় গতকাল বিকাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে ৫ কোটি ৮০ লাখ ২৯ হাজার ২০৭ জন কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৩ লাখ ৮০ হাজার ৮৮ জনের।
চলতি বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার ১০ দিন পর কভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর খবর জানায় সরকার। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে, শনাক্তের সংখ্যায় বিশ্বে বাংলাদেশ তালিকার ২৪তম অবস্থানে ও মৃত্যুর সংখ্যা বিবেচনায় বাংলাদেশের স্থান ৩৩তম।